সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০% বেতন বৃদ্ধি ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ার ঘোষণা এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি সমন্বয়ের কথা বলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সামান্য বৃদ্ধি কি বাস্তবিকই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদান করবে?
মূল্যস্ফীতির সাথে ১০% বেতন বৃদ্ধি: সমন্বয় না অসামঞ্জস্য?
বর্তমান বাজারের সাথে তুলনা করলে ১০% বেতন বৃদ্ধি খুব একটা সহায়ক বলে মনে হয় না। উদাহরণস্বরূপ, ২০ গ্রেডের একজন কর্মচারীর বর্তমান মূল বেতন যদি ১০,০৫০ টাকা হয়, তাহলে ১০% বৃদ্ধির পর তা হবে ১১,০৯০ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারের উচ্চমূল্যের প্রেক্ষাপটে এই বৃদ্ধির পরিমাণ খুবই নগণ্য। বর্ধিত বেতনে বাজারের চাহিদা পূরণ কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি: সুবিধা কি সমানভাবে বিতরণ হচ্ছে?
৯ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তার বেতন ২৬,৭৬০ টাকা হলে ১০% বৃদ্ধির পর তা দাঁড়াবে ২৯,৫১০ টাকা। যদিও এই বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে বেশি, তবে বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে তা কতটা সহায়ক হবে, সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ। অন্যদিকে, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধিতে আরও বেশি সমন্বয় প্রয়োজন, কারণ তাদের ক্ষেত্রে বাজারের চাপ আরও বেশি প্রকট।
বেতন বৈষম্য দূরীকরণে সরকারি কর্মচারীদের দাবি: নতুন পে-স্কেলের প্রয়োজন
বেতন বৈষম্য দূর করতে এবং বাজারের সাথে বেতনের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেলের দাবি করেছেন। তারা পে-কমিশন গঠন করে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও, অন্তবর্তীকালীন মহার্ঘ্য ভাতা, টাইম স্কেল পুনর্বহাল এবং গ্রাচুইটি বৃদ্ধি করার দাবিও তারা জানিয়েছেন।
জীবনযাত্রার খরচ এবং বাজার মূল্য: সংকট কাটছে না, বাড়ছে
বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে, এপ্রিলে পণ্যমূল্য বেড়েছে সর্বোচ্চ ৮.৬৪ শতাংশ, যা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর কল্যাণপুরের বাসিন্দা মিনহাজ উদ্দীনের উদাহরণ টেনে বলা যায়, তাদের পরিবারের ব্যয় এতটাই বেড়েছে যে, মিনহাজের স্ত্রীকেও চাকরি করতে হয়েছে।
এই উদাহরণটি দেখায় কিভাবে বেতন বৃদ্ধি হলেও জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে না, বরং আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে ।