সমুদ্র পথে বিদেশ যাত্রা প্রতারণা এড়াতে করণীয়

কর্তৃক সরকারি আদেশ
0 মন্তব্য 369 views

[ যে কোন ধরনের প্রতারণা রোধে বাংলাদেশ পুলিশ সদা সক্রিয়। এ লক্ষ্যে, সন্দেহভাজন প্রতারকদের চিহ্নিত করতে এবং সংগঠিত প্রতারণার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতারকদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন ইউনিট। তবে, শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে এ ধরনের অপরাধ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা খুব সহজ নয়। এক্ষেত্রে, সামাজিক সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই, আসুন এ ধরণের প্রতারণা এড়াতে কিছু সাধারণ পরামর্শ মেনে চলি।]

সমুদ্র পথে মায়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর বা মরোক্ক হয়ে স্পেন অথবা লিবিয়া, তিউনিসিয়া হয়ে ইতালী, গ্রীসসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাবার খবর আমরা প্রায়ই শুনতে পাই। তবে এর বেশির ভাগ খবরই থাকে দুর্বিষহ নির্যাতন ও নির্মমতার। সাধারণত সহজ শর্তে ও কম খরচে বিদেশে যাবার প্রলোভনে পড়ে কেউ কেউ দালালের ফাঁদে পা দিয়ে থাকেন। এসকল দালালরা দেশি-বিদেশি কিছু অসাধু চক্রের যোগসাজসে মূলত অবৈধ মানব পাচারের কাজ করে থাকে।

দালালরা গ্রাম ও মফস্বলের সহজ সরল লোকদের নানা রকম মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে বিদেশ যেতে আগ্রহী করে তোলে। যেমন, তারা হয়তো বলবে- ১। কম খরচে বিদেশে নিয়ে যাবে, ২। বেশি বেতনের চাকরি দিবে, ৩। যাবার আগে অল্প কিছু খরচ দিতে হবে, বাকি খরচ যাবার পর বেতন থেকে দিবেন, ৪। থাকা-খাওয়ার ভালো সুবিধা আছে, ইত্যাদি।

থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে দালালরা এভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্রহী লোকদের সংগ্রহ করে কক্সবাজরের কোনো হোটেলে বা পাহাড়ের ভেতরে গোপন কোনো স্থানে নিয়ে একত্রিত করে। পরবর্তিতে ২০/২৫ জন একসাথে হলে তাদেরকে সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে করে সেন্টমার্টিনের কিছুটা দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে নিয়ে অপেক্ষাকৃত বড় কোনো মাছ ধরার ট্রলারে তুলে দেয়। সেই ট্রলারে করে তাদেরকে মায়ানমার, থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ার সুবিধাজনক কোনো স্থানে (সাধারণত গভীর জঙ্গলে) নিয়ে বন্দী করে ফেলে।

তারপর শুরু হয় ভয়ংকর নির্যাতন। বেঁধে রেখে, ঠিক মতো খাবার না দিয়ে দিনের পর দিন নানা রকম শারীরিক নির্যাতন করে, আর পরিবারের নিকট ফোন করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপন দাবি করে। একবার মুক্তিপন দিলে নুতন কোনো অজুহাতে আবার টাকা দাবি করে। এভাবে কয়েক দফায় টাকা নিয়ে তারপর হয়তো ছেড়ে দিবে। তবে, ঠিক মতো মুক্তিপন না দিলে কাউকে কাউকে মেরে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে।

অন্যদিকে স্পেন, ইতালী, গ্রীসসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে সাধারণত প্রথমে ভারতে নিয়ে যাবে। ভারত থেকে পরবর্তিতে মরোক্ক, লিবিয়া, তিউনিসিয়া বা অন্য কোনো সুবিধাজনক দেশে নিয়ে যাবে। সে দেশে সুবিধাজনক কোনো স্থানে নিয়ে ভিকটিমকে বন্দী করে নির্যাতন শুরু করবে এবং মুক্তিপন দাবি করবে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকে মারাও গিয়ে থাকেন।

পরামর্শঃ এ ধরণের সহজ শর্তে ও কম খরচে বিদেশে যাবার প্রলোভনে পড়বেন না। যেকোনো প্রকারের অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

বিঃ দ্রঃ দেশের ভেতরে দালাল দ্বারা প্রতারিত হলে বা মুক্তিপনের জন্য কেউ নির্যাতনের শিকার হলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করুন। দেশের বাইরে থেকে expatriatehelp@police.gov.bd ঠিকানায় ইমেইল করে বা BD Police Helpline অ্যাপসের মাধ্যমে বা https://www.facebook.com/Bangladesh Police Official Page এর ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইতে পারেন।
মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স, বাংলাদেশ পুলিশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা

রিলেটেড আরও পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.