গ্রাম আদালতের বিধিমালা:
(১) ফৌজদারী কার্যবিধি ও দেওয়ানি কার্যবিধিতে যা কিছু থাকুক না কেন গ্রাম আদালত আইনের তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিত বিষয়াবলি সম্পর্কিত ফৌজদারি মামলা এবং দ্বিতীয় অংশে বর্নিত বিষয়াবলি সম্পর্কিত দেওয়ানি মামলা, ভিন্ন রকম বিধান না থাকলে গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য হবে এবং কোন ফৌজদারি আদালতের অনুরুপ কোন মামলার বিচারের এখতিয়ার গ্রাম আদালতে থাকবেনা।
(২) গ্রাম আদালত কর্তৃক তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধের সাথে কোন মামলা বিচার্য হবেনা যদি উক্ত মামলা আমলযোগ্য কোন অপরাধের দায়ে কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে ইতিপূর্বে গ্রাম আদালত কতৃক দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন যদি-
(ক) উক্ত মামলায় কোন নাবালকের স্বার্থ জড়িত থাকে।
(খ) বিবাদের পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত কোন চুক্তিতে সালিশের বা বিরোধ নিষ্পতির বিধান থাকে।
গ্রাম আদালত গঠনের আবেদন:
(১) উক্ত আইনের অধীন না মঞ্জুরের আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্দ ব্যক্তি আদেশের বিরুদ্ধে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে রিভিশন করতে পারবে।
আবেদনের ফিস:
তফসিলের প্রথম ভাগের সাথে সম্পর্কিত হলে দুই টাকা এবং দ্বিতীয় ভাগের সাথে সম্পর্কিত হলে আবেদনপত্রের সাথে চার টাকা ফিস জমা দিতে হবে।
নাকচ আবেদন না মঞ্জুরের আদেশসহ আবেদনকারীকে ফেরত প্রদান:
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক যে ক্ষেত্রে আবেদন নাকচ হয় সেক্ষেত্রে তা উক্ত না মঞ্জুরের আদেশ সমেত আবেদনকারীর নিকট ফেরত দিতে হবে।
আবেদন না মঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন/আপিল:
আবেদন না মঞ্জুর হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে পুন:বিচারের জন্য তা যথাযথ এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজের নিকট দাখিল করতে হবে।
আবেদনে কি কি তথ্য থাকতে হবে?
(ক) যে ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করা হয়েছে তার নাম ঠিকানা।
(খ) আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা ও পরিচয়
(গ) প্রতিবাদির নাম, ঠিকানা ও পরিচয়।
(ঘ) মামলার কারন সৃষ্টির নাম।(ঙ)ঘটনা সৃষ্টির কারন, স্থান, ইউনিয়নের নাম, ঘটনার তারিখ ও সময়।
(চ) অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরন।
(ছ) প্রার্থীর প্রতিকার।
আবেদন পাওয়ার পর চেয়ারম্যান কি করবেন?
আবেদন পত্র পাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান তা পরিক্ষা করে গ্রহণ করবেন। আবেদনপত্র গ্রহন করা হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিবাদের হাজির হতে সমন দেবেন এবং বাদীকে হাজির হতে নির্দেশ দেবেন। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। প্রতিবাদী দাবি বা বিবাদি স্বীকার করলে গ্রাম আদালত গঠন করা হবে না।
কী কী কারণে আবেদন নাকচ করা যাবে?
(ক) আবেদনের ফিস জমা না দিলে।(খ) এখতিয়ার বর্হিভুত হলে।
(গ) অপ্রকৃতস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আবেদন হলে।
(ঘ) আবেদনকারী, প্রতিবাদী, ঘটনার স্থান, সময়, ক্ষতির পরিমান, প্রার্থিত প্রতিকার ইত্যাদি উল্লেখ না থাকলে।
(ঙ) ব্যক্তি আদালত গ্রাহ্য কারনে পুর্বে দোষী সাব্যস্ত হলে।
(চ) নাবালকের স্বার্থের পরিপন্থি হলে। (ছ) বিরোধটি নিয়ে সালিসির চুক্তি হলে।
গ্রাম আদালতের এখতিয়ার:
(ক) যে ইউনিয়নের অপরাধ সংগঠিত হবে বা মামলার কারন উদ্ভব হবে, বিবাদের পক্ষগন সাধারনত সে ইউনিয়নের বাসিন্দা হলে, সে ইউনিয়নের গ্রাম আদালত গঠিত হবে এবং মামলার অনুরুপ মামলার বিচারের এখতিয়ার গ্রাম আদালতে থাকবে।
ফৌজদারী বিষয়ঃ
১। চুরি সংক্রান্ত বিষয়াদি
২। ঝগড়া-বিবাদ।
৩। শক্রতামূলক ফসল, বাড়ি বা অন্য কিছুর ক্ষতি সাধন।
৪। গবাদী পশু হত্যা বা ক্ষতিসাধন।
৫। প্রতারণামুলক বিষয়াদি।
৬। শারিরীক আক্রমণ, ক্ষতি সাধন, বল প্রয়োগ করে ফুলা ও জখম করা ।
৭। গচ্ছিত কোনো মুল্যবান দ্রব্য বা জমি আত্নসাৎ।
দেওয়ানী বিষয়ঃ
১। স্থাবর সম্পতি দখল পুনরুদ্ধার।
২। অস্থাবর সম্পত্তি বা তার মূল্য আদায়।
৩। অস্থাবর সম্পত্তি ক্ষতিসাধনের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়।
৪। কৃষি শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরী পরিশোধ ও ক্ষতিপুরণ আদায়ের মামলা।
৫। চুক্তি বা দলিল মূল্যে প্রাপ্য টাকা আদায়।